নিজস্ব প্রতিবেদক
মুক্তো দানার মতো শিশির জমতে শুরু করেছে ঘাসের ডগায়, ধানের শীষে। আদিগন্ত মাঠ জুড়ে এখন ধানের প্রাচুর্য। হলুদে-সবুজে একাকার অপরূপ প্রকৃতি। চারদিকে ধূসর আবহ। শেষ বিকালে কুয়াশার আবছা চাদর প্রকৃতিকে ঢেকে শিশিরের শব্দের মতো নামছে সন্ধ্যা।
‘সবুজ পাতার খামের ভেতর
হলুদ গাঁদা চিঠি লেখে
কোন্ পাথারের ওপার থেকে
আনল ডেকে হেমন্তকে’
আশ্চর্য ঋতু হেমন্তে প্রকৃতির বিচিত্র রূপের বর্ণনা আর স্তুতিতে মগ্ন হয়েছেন কবি-সাহিত্যিকেরা।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়—
‘হায় হেমন্তলক্ষ্মী, তোমার নয়ন কেন ঢাকা-
হিমের ঘন ঘোমটাখানি ধুমল রঙে আঁকা।
সন্ধ্যাপ্রদীপ তোমার হাতে মলিন হেরি কুয়াশাতে,
কণ্ঠে তোমার বাণী যেন করুণ বাষ্পে মাখা।
ধরার আঁচল ভরে দিলে প্রচুর সোনার ধানে।
দিগঙ্গনার অঙ্গন আজ পূর্ণ তোমার দানে…।
আজ পয়লা কার্তিক। আবহমান বাংলায় ষড় ঋতুর পরিক্রমায় এলো হেমন্ত।
শরত্কালের পর কার্তিক-অগ্রহায়ণ মিলে হেমন্ত। নতুন ঋতুর আগমনে রূপ বদলায় প্রকৃতি। হেমন্তকে বলা হয় শীতের বাহন। প্রকৃতিতে অনুভূত হচ্ছে ঈষত্ শীতার্ত আমেজ। দিনে তাতানো রোদ্দুর থাকলেও শেষ রাতে কুয়াশা ঘিরে রাখছে উত্তরের অনেক জনপদ।
গ্রামীণ জনপদে এখন হিম হিম অনুভব। খণ্ড খণ্ড মেঘ সরে গিয়ে উদোম হয়েছে বিশাল নীল আকাশ। আনন্দধারায় ভাসছে কৃষকের মন-প্রাণ। কারণ এই হেমন্তে বাড়ির উঠোন ভরে উঠবে নতুন ধানের ম-ম গন্ধে। বাঙালির প্রধান অন্ন, আমন ধান কাটার মাহেন্দ্র সময় হেমন্তের শেষ ভাগে।