নিজস্ব প্রতিবেদক
চরফ্যাশনের মেঘনা ও তেতুলিয়া উপকূলে বাগদা চিংড়ীর রেনু পোনা ধরার নামে চলছে নদী ও সামুদ্রিক মাৎস্য সম্পদ ধ্বংসের উৎসব।
জেলেরা অতি ক্ষুদ্র মশারী ও ৪ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার বা তদপেক্ষা কম ব্যাসের কারেন্ট জাল দিয়ে মাৎস্য সম্পদ ধংসের এই উৎসবে মেতে উঠেছে।
মশারী ও কারেন্ট জালের ব্যাপক ব্যবহারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে এখানকার প্রতিবেশ ও প্রকৃতিতে। ভারসাম্য হারাচ্ছে অভয়ারণ্য। এর প্রভাবে বিলুপ্তির পথে বিভিন্ন প্রজাতির নদী ও সামুদ্রীক উদ্ভিদ, গুল্ম, মাছ, শামুক, কচ্ছপ, জলজ পোকা মাকড় ও বিভিন্ন পাখী ও প্রাণী। এতে বিলুপ্ত হচ্ছে সামুদ্রীক সম্পদ।
সরে জমিনে দেখা গেছে, মৎস্য অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত চরফ্যাশনের মেঘনা, তেতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ উপকূলে শত শত জেলে নিষিদ্ধ ঘোষিত মশারী ও কারেন্ট জাল ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত বাগদা চিংড়ীর রেনু পোনা ধরছে। এই চিংড়ী পোনা ধরার নামে তারা বিভিন্ন প্রজাতির মাছের কোটি, কোটি পোনা, ডিম ও জুপাঙ্কটন ধ্বংস করছে।
সূত্র জানায়, আসলামপুর পুরানো স্লুইসঘাট, বেতুয়া, মাদ্রাজ নতুন স্লুইস ঘাট, সামরাজ, খেজুরগাছিয়া, মাইনুদ্দিন ঘাট, নুরাবাদ গাছিরখাল, নীলকোমল ঘোষের হাট, পাঙ্গাশিয়া, বাংলাবাজার, আহাম্মদপুর, হাজিরহাট, মায়ারদোন, জাহানপুরের পাঁচ কপাট স্লুইস ঘাট, কুকরি-মুকরি, ঢালচর, পাতিলা, দক্ষিণ আইচা, কচ্ছপিয়া, তুলাগাছিয়া, রসুলপুর আট কপাট স্লুইস ঘাট, আঞ্জুর হাট বকশী ঘাট, বাবুরহাট, কলমীতে মশারী ও কারেন্ট জাল ব্যবহার হচ্ছে বেশি। এসব এলাকায় একধিক চক্র চিংড়ীর রেনু কেনার নামে অসাধু জেলেদের সেল্টার দিয়ে মাৎস্য সম্পদ ধংস করাচ্ছে।

মৎস্য ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের তথ্য অনুযায়ী ক্ষুদ্র ফাঁসের মশারী জাল দিয়ে একটি বাগদা রেনু পোনা সংগ্রহে অন্তত ৯২ প্রজাতির মাছের পোনা ও জুপাঙ্কটন নষ্ট হয়। অর্থাৎ জেলেরা মশারী জালে একটি বাগদা রেনু ধরতে গিয়ে অন্তত ৪৬টি প্রজাতির চিংড়ি, ৩৫টি জুপাঙ্কটন প্রজাতির ও ১১টি সাদা মাছ প্রজাতির পোনা নষ্ট করছে।
জানা যায়, শুধু চরফ্যাশন নয়, ভোলার বিভিন্ন উপজেলার জেলেরা চরফ্যাশনের নদ-নদী উপকূলে এসে মশারী ও কারেন্ট জাল ব্যবহার করে নির্বিচারে মাৎস্য সম্পদ ধংস করলেও সংশ্লিষ্ট প্রসাশন নিরব। উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারের জাল ও সুঁতার দোকানগুলোতে নিষিদ্ধ মশারী ও কারেন্ট জাল বিক্রি হলেও কোনো অভিযান নেই সংশ্লিষ্ট প্রসাশনের।