ইদ্রিস মাদ্রাজী
আজ ৫০ বছরে পা রাখল বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর দেশের প্রথম ও সর্ববৃহৎ এ যুব সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক প্রথিতযশা সাংবাদিক শেখ ফজলুল হক মনি এ সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আজ শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুব মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত চলেছে। ১০ লাখের বেশি যুবকের সমাগম ঘটেছে এই মহাসমাবেশ। যা স্মরণকালের বৃহৎ জনসমুদ্রে পরিণত করে আরেক ইতিহাসে নিয়ে গেলো সোহরাওয়ার্দীকে।
সমাবেশ ঘিরে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে বর্ণাঢ্য সাজে সাজানো হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লেকের পূর্বপ্রান্তে মঞ্চ এবং দৃষ্টিনন্দন সুবিশাল প্যান্ডেল নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া পুরো ঢাকা শহরের প্রধান প্রধান সড়কের পাশে জাতীয় পতাকার পাশাপাশি যুবলীগের পতাকা দিয়েও সাজানো হয়েছে বর্ণাঢ্য রূপে। যুবলীগের এই যুব মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করেছেন, যুবলীগের সুবর্ণজয়ন্তীর মধ্য দিয়ে যুব সমাজের সংগ্রামী চেতনার ধারা আরও শানিত ও বেগবান হবে। তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের যুবদের বুকে অদম্য শক্তির যে বহ্নিশিখা প্রজ্বলিত করে গেছেন, যে প্রেরণা তিনি যুগিয়ে গেছেন, সেই প্রেরণায় উজ্জীবিত হয়ে যুবলীগ এদেশের যুবসমাজকে সঙ্গে নিয়ে সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবে—এ প্রত্যাশা করি।
আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুব মহাসমাবেশে সকলের উদ্দেশ্যে বিশেষ বার্তা দেবেন। সেই বার্তা শোনার জন্যই মানুষের ঢল নামবে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। এটি হবে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় যুব মহাসমাবেশ। শুক্রবার থেকে রাজপথ যুবলীগের নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলেও তিনি জানান।
দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম ও হাজারো নেতাকর্মীর আত্মত্যাগের মাধ্যমে যুবলীগ আজ দেশের সর্ববৃহৎ যুব সংগঠনে পরিণত হয়েছে।
যুবলীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন যারা: প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত যুবলীগের সাতটি জাতীয় কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৯৭৪ সালের প্রথম জাতীয় কংগ্রেসে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, বঙ্গবন্ধুর ভাগনে শেখ ফজলুল হক মনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৭৮ সালে দ্বিতীয় জাতীয় কংগ্রেসে আমির হোসেন আমু, ১৯৮৬ সালের তৃতীয় কংগ্রেসে মোস্তফা মহসীন মন্টু, ১৯৯৬ সালের চতুর্থ কংগ্রেসে শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ২০০৩ সালের পঞ্চম কংগ্রেসে জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং ২০১২ সালে ষষ্ঠ কংগ্রেসে মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে যুবলীগের আজ অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল ভোর ৬টায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। সকাল সাড়ে ৮টায় ধানমন্ডি বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ। সকাল সাড়ে ৯টায় বনানী কবরস্থানে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহিদ শেখ ফজলুল হক মনিসহ পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট নিহত সব শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও ফাতেহা পাঠ এবং মোনাজাত।