নিজস্ব প্রতিবেদক
গ্রামে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা সংক্রমণ। দেশের ৮০ ভাগ মানুষ গ্রামেই বসবাস করেন। অধিকাংশ গ্রামে সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত রোগী বেড়েছে। সঙ্গে অনেকের গলায় ব্যাথা রয়েছে। কিন্তু অতীতের মতো এসব রোগ এমনিতে ভাল হয়ে যাবে-এমন ধারণার পাশাপাশি সামাজিক বিড়ম্বনার ভয়সহ নানা কারণে উপসর্গ থাকার পরও অনেকে করোনা পরীক্ষা করতে চান না। শহরের তুলনায় গ্রামের মানুষের মধ্যে চিকিত্সা সেবা গ্রহণ, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও মাস্ক ব্যবহারে উদাসীনতা দেখা গেছে।
চিকিত্সক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এ প্রবণতাকে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ বলছেন। তারা উপজেলা পর্যায়ে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ, হাই ফ্লো নেজাল ক্যানোলা সরবরাহ করাসহ চিকিত্সা সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়ে বলেন, গ্রামের মানুষের সর্দি-কাশি জ্বর হলে পরীক্ষা করাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানাতে হলে সর্বস্তরের জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে কমিটি গঠন করতে হবে। এই কমিটিতে মসজিদের ইমামসহ সব ধর্মের প্রতিনিধিদেরও রাখতে হবে। গ্রামের প্রতিটি এলাকায় মাইকে কিংবা প্রতিনিধি দল বাড়ি বাড়ি গিয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। উপসর্গ দেখা দিলেই পরীক্ষা করতে হবে। কাউকে মাস্ক পরা ছাড়া ঘর থেকে বের হতে পারবেন বলে জানিয়ে দিবেন। প্রতি শুক্রবার জুম্মার নামাজের সময় ইমাম সাহেবও করোনা প্রতিরোধে এসব বিষয়ে মুসল্লিদের জানাবেন।
মানুষ কয়েক দফায় ঢাকা থেকে গ্রামে গিয়ে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অবাধ চলাফেরা করে ভাইরাসটি সেখানে রেখে এসেছেন। তা থেকেই অসচেতন গ্রামবাসীর মধ্যে করোনা নীরবে সংক্রমণ ঘটিয়ে চলেছে বলে মন্তব্য করেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, সংক্রমণ শুরুর পর লকডাউন দেয়ায় কয়েক দফায় মানুষ দলে দলে গ্রামে ফিরেছেন। মহামারির মধ্যে ঈদকে কেন্দ্র করে মানুষের বাড়ি যাওয়া উত্সবে পরিণত হয়েছিল। বাড়ি ফেরাদের অনেকেই সুপ্ত অবস্থায় করোনা ভাইরাস শরীরে বহন করে নিয়ে গেছেন। সেখানে হাট-বাজার, আত্মীয়ের বাড়িতে ঘুরেছেন অবাধে। এসব স্থানে হাঁচি-কাশি, কথা বলার মাধ্যমে সুপ্ত ভাইরাসটি রেখে এসেছেন। এছাড়া সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়েছে ব্যাপক হারে। সেখান থেকে সারাদেশের গ্রামে ছড়িয়েছে সংক্রমণ। এখনো সীমান্তের চোরাই পথের সরু গলি দিয়ে কৌশলে চলছে এপার-ওপারে অবাধে যাতায়াত।