চরফ্যাশনে নিহত মনিরের গুলির উৎস নিয়ে ধুম্রজাল

0
1

নিজস্ব প্রতিবেদক

চরফ্যাশনের হাজারীগঞ্জ ৫নং ওয়ার্ডে ভোট গ্রহণের দিন নিহত মনিরকে কে গুলি করেছে, ওই গুলির উৎস নিয়ে সৃষ্ট হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন মত। গুলিবিদ্ধ হয়ে মনির নিহত হয়েছে এমনটা পুলিশসহ সকল পক্ষ স্বীকার করলেও গুলির উৎসের জটিলতা খুলছে না। বরং ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ৫নং ওয়ার্ডে মেম্বর পদে ৩জন প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। ফুটবল প্রতীকের প্রার্থী ইয়াছিন মাঝির বাড়ি মহিলাকেন্দ্র সংলগ্ন এবং টিউব ওয়েল প্রতীকের প্রার্থী ইউসুফ সিকদারের বাড়ি পুরুষকেন্দ্র সংলগ্ন।

বাড়িসংলগ্ন কেন্দ্র হওয়ায় দুই প্রার্থী কেন্দ্রে আধিপত্য বিস্তারে মরিয়া ছিল আগে থেকেই। ভোটের দিন সকালে পুরুষ ভোটকেন্দ্রে ইউছুফ সিকদার ও ইয়াছিন মাঝির কর্মীদের মধ্যে মারপিট হয়।

এরপর মহিলা ভোটকেন্দ্রে দেশী ধারালো অস্ত্র, লাঠি, লোহার রড নিয়ে ইয়াছিন মিঝির সমর্থকরা ইউসুফ সিকদারকে ধাওয়া করে। হামলার মুখে প্রার্থী ইউসুফ সিকদার কেন্দ্রের মধ্যে ৩য় তলায় ভোটগ্রহনকারী কর্মকর্তাদের কক্ষে আশ্রয় নেন।

হামলাকারীরা ৩য়তলা ভোটকেন্দ্রের নিচতলার লোহার গেইট ভেঙ্গে ২য় তলায় উঠে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে প্রশাসনের লোকজন ৩য় তলায় উঠে লোহার গেইটটি বন্ধ করে দেয়। এসময় হামলাকারীরা ২য় গেইট ভেঙ্গে ৩য় তলায় উঠার চেষ্টা করলে পুলিশ গুলি ছোঁড়ে। ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ মনিরকে উদ্ধার করে চরফ্যাশন হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মারা যায়।

ওই ভোটকেন্দ্রের একজন পুলিংএজেন্ট জানান, নিহত মনিরও হামলাকারীদের একজন ছিল। সে গেইটের পাশের গ্রিলভেঙ্গে ৩য় তলায় প্রবেশের চেষ্টা করে। এসময় পুলিশের গুলিতে সে মারা যায়।

স্থানীয় অনেকে দাবী করেন পুলিশের গুলিতে মনিরের মৃত্যু হয়েছে।

প্রিজাইডিং অফিসার ইমাম হোসেন দাবি করেন, কেন্দ্রের বাহিরে দুপক্ষের সংঘাত হয়। এক পক্ষ কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ১২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। তবে পুলিশের গুলিতে কেউ মারা যায়নি।

অপরদিকে পুলিশ সুপার গুলি ছোঁড়ার কথা স্বীকার করলেও পুলিশের গুলিতেই যে মনির মারা গেছেন তা স্বীকার করছেন না।

মৃত্যুর ঘটনায় মনিরের বাবা বশির সিকদার বাদি হয়ে শশীভূষণ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় টিউবওয়েল মার্কার প্রার্থী ইউসুফ সিকদার ও তার কর্মী-সমর্থকদের আসামী করা হয়েছে। মামলার এজাহারে প্রতিপক্ষের গুলিতে মনিরের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবী করা হয়েছে।

নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য ইউসুফ শিকদার বলেন, আমরা সম্পূর্ণ নির্দোষ। কেন্দ্রে সংঘাত-সংঘর্ষ চালিয়েছে রুহুল আমিন ও ইয়াছিন মাঝির লোকজন। তারাই কেন্দ্র দখলের চেষ্টা করলে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা গুলি চালাতে নির্দেশ দিলে পুলিশ গুলি চালায়। ওই গুলিতে মনির মারা যায়।

ইয়াছিন মাঝী বলেন, প্রতিপক্ষ ইউছুফ সিকদার কেন্দ্র কিনে নিয়েছে, প্রশাসন আমাদের লোকজনকে কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়নি, মার পিটি করেছে। যারা গুলি করেছে তাদের গায়ে পুলিশের পোশাক ছিল। তবে তারা পুলিশের লোক না প্রতিপক্ষের তা বলতে পারছি না।

হাজারীগঞ্জ ইউপি চেয়াম্যান জানান, পুলিশের গুলিতে মনির নিহত হয়েছে। মামলা হয়েছে নিরপরাধ লোকদের বিরুদ্ধে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here