নিজস্ব প্রতিবেদক
পর্যটন এলাকা চরফ্যাশন উপজেলায় মেঘনা, তেতুলিয়া ও বঙ্গপোসাগর বেষ্টিত উপকূলীয় দ্বীপগুলোর ম্যানগ্রোভ বন জোয়ারের লোনাপানিতে তলিয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন। এতে খাদ্য ও মিঠাপানির তীব্র সংকটে চরের গরু, মহিষ, ভেড়া, ছাগল ও হরিণসহ প্রাণ হারাচ্ছে হাজারো বন্যপ্রাণী।
গত চার মাস ধরে বাড়তে থাকা সাগরের লোনাপানিতে ঢালচর, কুকরি-মুকরি, চরনিজাম, চরপিয়াল ও মনপুরাসহ জেলার বেশকিছু চরের ম্যানগ্রোভ বাগান ঝড়-জলচ্ছাস ও জোয়ারের প্রভাবে প্রায় সময়ই তলিয়ে যায়। ফলে বিপাকে পড়ে বন ভোঁদর, শেয়াল, বানর, বিভিন্ন প্রজাতীর গুঁইসাপসহ সরিসৃপ প্রাণী ও চিত্রা হরিণের পাল। বাড়তে থাকা মিঠাপানির এ সংকটে হরিণসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী খাদ্য ও মিঠাপানির সন্ধ্যানে চলে আসছে লকালয়ে। এতে করে প্রতিদিন অসাধু শিকারীদের হাতে মারা পড়ছে হরিণসহ বিভিন্ন প্রজাতীর বন্যপ্রাণী।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে গত (২৬ মে) চরনিজামের লকালয়ে আসা দুইটি হরিণ জীবিত উদ্ধার করে বন বিভাগ। নজরুল নগর থেকেও একটি জবাইকৃত হরিণ উদ্ধার করে কোস্টগার্ড। এছাড়াও ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী মেঘনার বেতুয়া এলাকায় ভেসে আসে একটি মৃত হরিণ। বনাঞ্চলের এসব বন্যপ্রাণী ও চরের গৃহপালীত গরু, মহিষ ও ভেড়া ছাগলের জন্যে নেই পর্যাপ্ত মিঠাপানির উৎস।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস পরবর্তী চরাঞ্চলগুলোতে মিঠাপানির সংকটে মারা যায় কয়েক শতাধীক গরু ও মহিষ। এসব চর ও বনাঞ্চলে ঝড় জলচ্ছাসের সময়ে বন্যপ্রাণী ও গবাদিপশু পাখির আশ্রয় নেয়ার জন্যেও নেই পর্যাপ্ত আশ্রয়স্থল।
ভোলা সরকারী কলেজের প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগের প্রধাণ প্রফেসর মোমেন মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, বন্যপ্রাণীসহ চরের গবাদিপশুর জন্য বনের মধ্যে স্থায়ীভাবে মিঠাপানির ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে অভয়াশ্রম গড়ে তুলতে হবে। অন্যথায় দূর্যোগের সময় বন্যপ্রাণীকে বাঁচানো যাবে না।
চর কুকরি-মুকরি ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসেম মহাজন গণমাধ্যমকে বলেন, এসব চরগুলোতে প্রায় ৭০হাজার গরু ও মহিষ রয়েছে প্রতিবছর এসব চর থেকে বিপুল পরিমাণে দুধ উৎপাদন হয়। এসব এলাকার গরু মহিষ ও ভেড়া ছাগলের জন্য মিঠাপানির পর্যাপ্ত সংকট রয়েছে।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতিকুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, লবণাক্ত পানির কারণে গবাদিপশু ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এতে খামারীসহ গরু মহিষ পালনকারীরা লোকসানে পড়ছে।