আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পাপমুক্তি ও আত্মশুদ্ধির আকুল বাসনা নিয়ে পবিত্র হজ পালন করেছেন ৬০ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমান। হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে সোমবার আরাফাতের ময়দানে সমবেত হন তাঁরা। তাঁদের কণ্ঠে ছিল আবেগ মেশানো একটাই রব, ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।’ অর্থাৎ ‘আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই, সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার।’
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সীমিত পরিসরে হজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগে অন্যান্য বছর ৯ জিলহজের (সৌদি আরবের হিসাবে সোমবার) দিনটিতে আরাফাতের ময়দানে সমবেত হতেন আনুমানিক ২৫ লাখ হাজি। তবে গত বছরের মতো এবারও এ ময়দানের চিত্র ভিন্ন।
সৌদি আরবের হজবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি, রয়টার্সসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, গত বছরের মতো এ বছর সৌদি আরবের বাইরের কোনো দেশ থেকে হজে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না মুসল্লিরা। যাঁরা করোনা টিকার দুই ডোজ নিয়েছেন, বয়স ১৮ থেকে ৬৫ বছর এবং কোনো সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত নন, শুধু তাঁরাই হজ পালনের সুযোগ পাচ্ছেন। হজ পালনকালে মুসল্লিদের স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ। গত বছর এক হাজার মুসল্লি হজে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছিলেন।
হজের তিনটি ফরজের মধ্যে আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত না হলে হজ হবে না। এ ময়দানে মসজিদে নামিরাহ থেকে এবার হজের খুতবা দেন মসজিদুল হারামের ইমাম ও খতিব শায়খ ড. বান্দার বিন আবদুল আজিজ বালিলা। খুতবার শুরুতে মহান আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা এবং মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)–এর ওপর দরুদ শরিফ পাঠ করেন তিনি। উপস্থিত হাজিদের সুস্থতা কামনা ও তাঁদের জন্য দোয়া করেন। খুতবায় তিনি বলেন, কোনো মুসলমানের যদি সক্ষমতা থাকে, তবে জীবনে একবার হলেও তাঁকে হজ করতে হবে।
আরাফাতের ময়দান থেকে সূর্যাস্তের পর মুজদালিফার উদ্দেশে রওনা দেন হাজিরা। মুজদালিফা যাওয়ার পথে মাগরিবের নামাজের সময় হলেও নামাজ পড়া নিষিদ্ধ। তাই মুজদালিফায় পৌঁছার পর মাগরিব ও এশার নামাজ একসঙ্গে আদায় করেন তাঁরা।