লালমোহনে ২ প্রতিবন্ধীসহ ৬ সদস্যের পরিবারের মানবেতর জীবন!

0
3
মেঘনার বেড়ি বাঁধের ঢালে আবুল কাশেমের ঘর ও তার পরিবার।

মাকসুদুর রহমান পারভেজ, লালমোহন

ভোলার লালমোহন উপজেলার ধলীগৌর নগর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড কালামুল্লাহ গ্রামের বাসিন্দা আবুল কাশেম। ভয়াল মেঘনার থাবায় বাপ-দাদার ভিটে বাড়িসহ সর্বস্ব হারিয়ে বর্তমানে উত্তাল মেঘনার পাড়ে ঝুপড়ি ঘরে বসতি তার। এখানেও যেন নিয়তি তাকে ঠাঁই দিচ্ছে না।

আইলা, সিডর ও যশের প্রভাবে মেঘনার উত্তাল ঢেউ বেশ কয়েক বার ভেঙে দিয়েছে তার বসত ঘর।
বৃদ্ধ বাবা আবদুল জলিল, স্ত্রী, ৪ মেয়ে ও ১ ছেলেকে নিয়েই ছিল আবুল কাশেমর পরিবার। পেশায় জেলে আবুল কাশেমই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম। প্রায় মাস তিনেক আগে অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে ও অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যায় তার বড় মেয়ে জান্নাত (১৬)।

বর্তমানে তিন মেয়ের মধ্যে মেঝো মেয়ে স্বন্না (১৩) বাক প্রতিবন্ধী, ছোট মেয়ে সুমাইয়া (৬) দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এবং বয়সের ভারে ন্যূজ হয়ে ঘরে পরে আছে বৃদ্ধ পিতা। তবে প্রতিবন্ধী মেয়ে ও বৃদ্ধ পিতার জন্য পাননি কোন সরকারি সহায়তা।

জেলে আবুল কাশেম জানান, প্রতিবন্ধী দুই মেয়ে ও বৃদ্ধ বাবার জন্য কোন ভাতার ব্যবস্থা হয়নি। বার বার চেয়ারম্যান মেম্বারদের কাছে গিয়েও কোন লাভ হয়নি। তাই এখন আর যাইনা। দুঃখ কষ্ট নিয়ে নদীতে মাছ ধরে কোন রকম সংসার চালাই, আমাগো এক সময় বিশাল বাড়ি ছিল, তিন চার কানি জমি ছিল, নদী ভাঙ্গানে সবই বিলীন হয়ে গেছে। ৩ বার ঘর নড়া চড়া দিয়েছি। এখন বেড়ি বাঁধের ঢালে কোন রকম দিন কাটাই। তবে ঝড়বৃষ্টি আসলে খুব ভয় লাগে। কখন জানি এ ঘরও উড়িয়ে নিয়ে যায়। শুনছি সরকার ভূমিহীনদেরকে ঘর দেয়, সরকারীভাবে একটি ঘর চেয়েও অনেক চেষ্টার পর নাম লিখে নিয়েছে কয়েক বার কিন্তু আজ পর্যন্ত ঘরতো দুরের কথা কিছুই দেয়নি মেম্বার-চেয়ারম্যান, বলতে বলতে দু চোখে পানি গড়িয়ে পরছিল জেলে আবুল কাশেমের।

ধলীগৌর নগর ইউপি চেয়ারম্যান হেদায়েতুল ইসলাম মিন্টু বলেন, তারা আপনাদের কে বলে কেন? আমাদের কাছে আসতে পারে না?

এ ব্যাপারে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো: মামুন হোসেন জানান, ২০১৬ সাল থেকে দ্বারে দ্বারে গিয়ে প্রতিবন্ধীদের জন্য সূবর্ণ নাগরিক নামে তালিকা করে কার্ড প্রদান করা হয়েছিল। তারা যদি সে তালিকায় না থাকে তবে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র নিয়ে আসলে আমরা তার ব্যবস্থা করে দিব।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here