মাকসুদুর রহমান পারভেজ, লালমোহন
লালমোহন উপজেলায় ৩৩৩ নম্বরে কল দিয়ে খাদ্য সহায়তা চেয়ে সন্ত্রাসী হামালার স্বীকার হয়েছেন ফারুক নামের একজন।
করোনাকালে অভাব অনটন ও খাদ্য সংকটে ছিলেন লালমোহন উপজেলার লর্ডহাডিঞ্জ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড ফাতেমাবাদ এলাকার ফারুক। ফারুকের কষ্ট দেখে প্রতিবেশী আলমের মেয়ে রুমা গত শুক্রবার (২৫ জুন) ফারুককে খাদ্য সহায়তা জন্য ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে এবং ফারুকের পূর্ণ ঠিকানা দেয়।
বিকেলে ফারুককে ত্রাণ দেয়া হবে বলে এলাকার ছালাউদ্দিন দালাল ও হায়দার মেম্বার ইউনিয়ন পরিষদে আসতে বলে। পরিষদে যাওয়ার পর ইউপি চেয়ারম্যানসহ অন্যরা ফারুককে কেন ৩৩৩ এ খাদ্য সহায়তা চেয়ে ফোন করেছে জানতে চায় এবং তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে, শাসিয়ে খাদ্য সহায়তা না দিয়ে বিদায় করে।
ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বাড়ী ফেরার পথে হঠাৎ ৮/১০ লোক কোন কথা না বলে তাকে এলোপাতারী মারপিট করতে থাকে। সে চিৎকার করলেও কেউ এগ্রিয় আসেনি। এক পর্যায়ে তাকে মুমূর্ষূ অবস্থায় ফেলে তারা চলে যায়।
পরে সে অন্যের সহায়তায় বাড়ী আসে। সে বর্তমানে প্রচন্ড অসুস্থ। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে না পেরে হাটের ফার্মেসীর থেকে ঔষধ খাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ফোন করার পরামর্শ দেয়ার অপরাধে আলম এর মেয়ে রুমা ও আলমের স্ত্রীকেও ইউনিয়ন পরিষদে আনা হয়। সেখানে কয়েকজন মিলে ৩৩৩ এ কেন রিং করেছে জানতে চায় এবং তাদেরকে অপমান, অপধস্ত ও ভয়ভীতি দেখিয়ে বিদায় করা হয়।
এদিকে ফারুকের বাড়ীতে সাংবাদিক এসেছে শুনে ছালাউদ্দিন দালাল সেখানে উপস্থিত হন এবং বলেন ফারুক ৩৩৩ তে রিং করে অন্যায় করেছে। আমরা তাকে সকল ধরনের সুযোগ দিচ্ছি।
তারপরও কেন সে ৩৩৩ তে রিং করবে। অভাবে থাকলে আমাদেরকে বলবে। সে ঢাকাতে ফোন করেছে, ঢাকা থেকে ইউএনওকে ফোন করা হয়েছে, ইউএনও চেয়ারম্যানকে বলেছে, চেয়ারম্যান আমাদেরকে বলেছে।
গরীব মানুষের জন্য ৩৩৩ তে খাদ্য সহায়তা চাওয়া অন্যায় কিনা জিজ্ঞাসা করলে লালমোহন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আল নোমান বলেন, ৩৩৩ চালু করা হয়েছে যারা খাদ্যের অভাবে রয়েছে তাদেরকে সহায়তা করার জন্য।
তিনি বলেন, আমার কাছে ৩৩৩ থেকে একটি এসএমএস আসার পর আমি চেয়ারম্যান এর কাছে ফরওয়ার্ড করে দিয়ে তার সম্পর্কে জেনে তাকে সহায়তা করার জন্য চেয়ারম্যানকে বলেছি।
ত্রাণের কথা বলে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে পিটানো হয়েছে এ বিষয়টি আমি জানিনা এবং এই মাত্র অবগত হলাম।
তিনি বলেন, ত্রাণের কথা বলে নিয়ে কাউকে পিটানো হলে এটা অন্যায় করা হয়েছে। যা মোটেই কাম্য নয়।
তিনি বরলেন, এ ব্যপারে অভিযোগ করলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।