সিলেট সংবাদদাতা
কিশোরগঞ্জের দুই সন্তানের জননী এক গৃহবধূকে (২৫) বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সিলেটে এনে ৯ জন মিলে দল বেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগে পুলিশ পৃথক অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করেছে।
বুধবার (১৪ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে গ্রেফতারদের আদালতে নেয়া হলে মামলার ২নং আসামি বিমানবন্দর থানার ফড়িংউরা গ্রামের মৃত ইউনুছ আলীর ছেলে ফয়সল আহমদ (২২) দায় স্বীকার করে সিলেটের মুখ্য মহানগর বিচারিক হাকিম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। বিমানবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাইনুল জাকির বলেন, প্রধান দুই আসামিও পুলিশের কাছে দায় স্বীকার করে জড়িতদের নাম ঠিকানা জানিয়েছেন।
এর আগে বুধবার (১৪ জুলাই) সকালে ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে নয়জনকে আসামি করে সিলেট মহানগর পুলিশের বিমানবন্দর থানায় মামলা করেছেন। ওই নারীর অভিযোগ, তাকে সিলেটের বিমানবন্দর থানার খাদিমনগর ইউনিয়নে বুরজান চা-বাগানের সুন্দর মরাকোনা টিলার ওপর একটি নির্জন স্থানে নিয়ে ৯জন মিলে পর্যায়ক্রমে টানা তিনদিন ধরে আটকে রেখে ধর্ষণ করে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, কিশোরগঞ্জের ভৈরবের ওই নারীর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ হয় সিলেটের বিমানবন্দর থানার লাউগুল গ্রামের মৃত হামিদ মিয়ার ছেলে জামেদ আহমদ জাবেদের (৩৬)। এক পর্যায়ে জাবেদ তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এতে প্রথমে ওই নারী আপত্তি জানালেও পরে রাজি হন।
কথা অনুযায়ী, গত ১০ জুলাই (শনিবার) সন্ধ্যায় ভৈরব থেকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন রশিদ চত্বরে আসেন তিনি। সেখান থেকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে জাবেদ তাকে খাদিমনগর বুরজান চা-বাগানের মরাকোনা টিলার ওপর একটি ছাউনির ভেতর নিয়ে যান।
সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষায় ছিলেন জাবেদের সহযোগী ফয়সল আহমদ (২২), রাসেল আহমদ (২৪), জামিল আহমদ (২২)। সেখানে চারজন ভয় দেখিয়ে ওই নারীকে চা-বাগানে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এসময় প্রতারক জাবেদ ওই গৃহবধূর মোবাইলসহ ব্যাগভর্তি কাপড় ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও ছিনিয়ে নেয়।
এজাহারে ওই নারী আরও অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) সকাল অনুমান ৬টার দিকে জাবেদের আরও পাঁচ সহযোগী রুবেল (২৫), ইমাম (২৫), ফারুক (২৩), মো. মোশাহিদ আহমদ (২৭) ও আবুল (২৬) সেখানে যান। তখন জাবেদসহ অন্যরা ওই পাঁচজনের কাছে তাকে দিয়ে চলে যান। এরপর ওই পাঁচ ব্যক্তি পালাক্রমে তাকে ধর্ষণ করে। বেলা ১১টার দিকে তাকে ফেলে সবাই চলে গেলে চা-বাগানের ওই নির্জন স্থান থেকে বেরিয়ে আসেন ওই গৃহবধূ। এরপর রাস্তায় এক লোকের সহায়তায় নিজের খালাতো বোনকে ফোন দিয়ে বিস্তারিত জানান।
এ বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের বলেন, ওই নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে বুরজান চা-বাগান এলাকা থেকে জাবেদ ও মোশাহিদকে আটক করা হয়। এরপর তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ফয়সল ও রাসেলকে আটক করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ওই গৃহবধূকে চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।