নিজস্ব প্রতিবেদক
সাগরে ৬৫ দিন মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে ২৩ জুলাই রাত ১২টায়। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর নতুন আশায় গভীর সমুদ্রে ইলিশ শিকারে যাচ্ছেন জেলেরা। মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়ায় চরফ্যাশনসহ বরিশালের উপকূলীয় জেলেপল্লি ও মৎস্য বন্দরগুলো সরগরম হয়ে উঠেছে।
জানা গেছে, সামুদ্রিক মাছের বাধাহীন প্রজনন ও সংরক্ষণে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মত্স্য আহরণে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মত্স্য বিভাগ। বছর জুড়ে ইলিশের আকাল আর করোনার প্রাদুর্ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে দখিনের জেলেরা। করোনাকালে সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া অপ্রতুল খাদ্যসহায়তা নিয়েও রয়েছে জেলেদের ক্ষোভ। দীর্ঘ নিষেধাজ্ঞা সমুদ্রে নামার আগে তাই জেলেদের চোখে-মুখে নতুন আশা—জালে ধরা পড়বে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। ফের প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠবে মৎস্যবন্দর মনপুরা, চরফ্যাশন, আলীপুর মহিপুরের আড়তগুলোসহ ভোলা ও বরিশালের পাইকারি পোর্ট রোডের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র।
চরফ্যাশন ও মনপুরার একাধিক জেলে, ট্রলার মালিক, আড়তদার, দাদনদার ও বরফকল মালিকরা জানান, প্রতি মৌসুমে তারা লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন লাভের আশায়। কিন্তু করোনাসহ মৌসুমের শেষভাগে বিপুল টাকা বিনিয়োগে অনেকেরই অনীহা। এছাড়াও মাত্র দুই মাস পর অক্টোবরে ফের মা-ইলিশের ২২ দিনের জন্য সাগর এবং নদীতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
জেলেরা জানান, মাঝারি কিংবা বড় সাইজের ট্রলার নিয়ে সাগরে নামতে খরচ হয়ে থাকে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। এবার ৬৫ দিন বেকার থাকায় পুঁজি শেষ করে ধার-দেনায় জর্জরিত তারা। পাশাপাশি আড়তদার কিংবা দাদনদাররাও খুব একটা ঝুঁকি নিতে রাজি নন। বরফকল মালিকরা জানিয়েছেন, বছরের পুরোটাই তাদের টেকনিশিয়ানসহ শ্রমিকদের বেকার বসিয়ে টাকা গুনতে হয়।
মৌসুমের চার মাসে তারা আয় করে তা পুষিয়ে নিয়ে থাকেন। কিন্তু ভরা মৌসুমে দুই মাসেরও বেশি সময় নিষেধাজ্ঞা থাকায় অনেকেই বরফকল চালু করতে চাচ্ছেন না।